শীতকালীন বিষণ্ণতাঃ লক্ষণ ও সমাধান

Psychology

শীতকালীন বিষণ্ণতাঃ লক্ষণ ও সমাধান

শীতের আগমনে সচরাচর আমাদের চোখে ভেসে উঠে সূর্যের নরম আলো, নানা রকমের পিঠা, শীতের উষ্ণতা, কিংবা কুয়াশার ছবি।কিন্তু মানুষ আছেন যাদের শীত ঋতুর সাথে এত নরম উষ্ণ ভালো লাগারগল্প থাকে না। এই শীতকে কেন্দ্র করে বিশেষ কিছু মানসিক লক্ষণ তৈরি হলে মনোবিজ্ঞানীরা তাকে বলছেন সিজনাল এফেক্টিভ ডিপ্রেশন বা উইন্টার ডিপ্রেশন। 

ডিএসএম ৫ অনুযায়ী, বিষণ্নতার মূল দুইটি লক্ষণের মধ্যে যেকোনো একটি থাকতে হবে;
১) সব সময়মন খারাপ থাকা কিংবা 
২) কোন কাজে আগ্রহ না পাওয়া। সেই সাথে নিচের লক্ষণগুলোর মধ্যে যেকোনো ৫টি লক্ষণ থাকা। সেগুলো হচ্ছেঃ

▪ মানসিক অবস্থার পরিবর্তন: দিনের বেশিরভাগ সময় বিষণ্ন মেজাজ, সমস্ত কার্যকলাপেরপ্রতি আগ্রহ বা আনন্দ লক্ষণীয়ভাবে হ্রাস পেয়েছে, 
অতীত নিয়ে নেতিবাচক চিন্তা করা, অপরাধবোধ, আত্মহত্যার চিন্তা এবং মনোযোগ দিতে না পারা।  

▪ শারীরিক লক্ষণঃ খাবারের রুচি না থাকা, ক্লান্ত লাগা, ঘুম বেড়ে যাওয়া বা কমে যাওয়া, 

সিজনাল এফেক্টিভ ডিপ্রেশনের যে-সব লক্ষণ রয়েছেঃ  
▪ বিষন্নতার লক্ষণগুলো শুধু মাত্র শীতের সময়ই থাকে; অন্য ঋতুতে এই লক্ষণগুলো অনুপস্থিতিরথাকে
▪ এই লক্ষণগুলো যদি টানা দুই বছর ধরেই দেখা দেয়

এই ধরনের লক্ষণ কেন হয় তা নিতে বেশ মতভেদ আছে। ন্যাশনাল লাইব্রেরি অব মেডিসিনের রিপোর্টঅনুযায়ী প্রকাশিত একটি গবেষণায় এই লক্ষণ তৈরি হওয়ার কারণগুলো আলোচনা করা করা হয়েছে। এখানে শারীরিক কারণ হিসেবে সেরোটোনিন কমে যাওয়া এবং মেলাটোনিন বেড়ে যাওয়ায় শরীরেরঅভ্যন্তরীণ অবস্থাকে প্রভাবিত করে। সেই সাথে সূর্যের আলো শরীরের না লাগার ফলে শরীরেরভিটামিন ডি তৈরি হতে পারে না।  সেরোটোনিন, মেলাটোনিন, সার্কাডিয়ান রিদম, ভিটামিন ডি এবংএসএডি-এর মধ্যে কার্যকারণ সম্পর্ক এখনও নিশ্চিত করা যায়নি। তবে এই মূল কারণগুলির মধ্যেসম্পর্ক পাওয়া গেছে এবং গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছে। 

যদি এই ধরনের লক্ষণ তৈরি হয়, প্রতিরোধের জন্য যা করা যেতে পারেঃ

1. নিয়মিত সূর্যের আলোতে কিছু সময় বসুন।
2. বিষন্নতার লক্ষণই হচ্ছে কিছু করার আগ্রহ না হওয়া। তাই নিজেকে মনে করিয়ে দিন যে এইলক্ষণগুলো তৈরি হতে পারে । আপনার ছোট ছোট চেষ্টা আপনাকে বিষন্নতার লক্ষণ থেকে বেরহতে সাহায্য করবে।
3. দিনের কাজগুলোকে ৩টি ভাগে ভাগ করে ফেলুন; ১) দৈনন্দিন কাজ, ২) প্রয়োজনীয় কাজ, ৩) আনন্দ দায়ক আজ। প্রতিটি কাজই অল্প অল্প করে করার চেষ্টা করুন। 
4. নিজের মানসিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ করুন। দৈনন্দিন কাজ করার পর কেমন লাগছে তা বোঝারচেষ্টা করুন। নিজের চেষ্টাকে স্বীকৃতি দিন।
5. এরপরেও কোন পরিবর্তন না হলে কোন বিশেষজ্ঞের সহায়তা নিন।

সিজনাল এফেক্টিভ ডিপ্রেশন বা উইন্টার ডিপ্রেশন তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা থাকলে আতংকিত না হয়ে, নিজের লক্ষণগুলো বোঝার চেষ্টা করুন এবং লক্ষণ অনুযায়ী পরিবর্তনের পরিকল্পনা করুন। নিজেকেভালো রাখুন । প্রয়োজনে বিশেষজ্ঞের সহায়তা নিন। 

সায়মা আক্তার
এ্যাসিটেন্ট ক্লিনিকাল সাইকোলজিস্ট ও ফাউন্ডার, সাইকোচ।

Leave your thought here

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Categories

You cannot copy content of this page

Select the fields to be shown. Others will be hidden. Drag and drop to rearrange the order.
  • Image
  • SKU
  • Rating
  • Price
  • Stock
  • Availability
  • Add to cart
  • Description
  • Content
  • Weight
  • Dimensions
  • Additional information
Click outside to hide the comparison bar
Compare