সিনিয়র সিটিজেন এবং ডিপ্রেশন

Psychology

সিনিয়র সিটিজেন এবং ডিপ্রেশন

বর্তমান সময়ে পারিবারিক কোন সমস্যা না থাকলেও পরিবারের বৃদ্ধ মা-বাবাকে ত চাকরী পড়াশুনার জন্য সময় দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। একটি সমাজের সামাজিক অবকাঠামোর পরিবর্তন হওয়া খুব স্বাভাবিক বিষয়। তবে সেই সাথে পরিবর্তনের সাথে যে সমস্যাগুলো তৈরি হচ্ছে সেগুলোর ও সমাধান হওয়া জরুরী।

ইরিকসনের থিওরি অনুযায়ী যারা সিনিয়র সিটিজেন (বয়স ৬০ বা তার ঊর্ধ্বে) মধ্যে বয়স বাড়ার সাথে সাথে কর্মক্ষমতা কমতে থাকে এবং নিজেকে ভিন্ন ভাবে দেখতে শুরু করেন। এই সময় তারা জীবন হিসেবে নিকেশ করতে শুরু করেন। যখন নিজের প্রাপ্তি গুলো দেখতে পায় তখন নিজেকে নিয়ে গর্ববোধ করে। আবার যদি তারা কোন কিছুতে ব্যর্থ হয়ে থাকে বা বারবার অসফলতার সম্মুখীন হয়ে থাকেন তাহলে এই বয়সে এসে তারা অনুশোচনায় ভুগে এবং মনে করে তাদের এত বছরের জীবন সবই বৃথা।

এই সময়ে আশে পাশের বন্ধু বান্ধব অনেকের মৃত্যুর সংবাদ বা অসুস্থতার কথা শুনেন। ফলে তাদের মধ্যে আশংকা, একাকীত্ব, একই সাথে আশা নিরাশা তৈরি হতে থাকে। তারা নিজেকে কিছুটা প্রস্তুত করা শুরুও করেন আবার একই সাথে শারীরিক দূর্বলতার জন্য কি করবে বা করবেন না – সেটাও বুঝতে পারেন না।

ফলে সামগ্রিক ভাবে তাদের মানসিক অবস্থার উপর একটি নেতিবাচক প্রভাব তৈরি হচ্ছে।

তাদের জন্য আমরা যা করতে পারিঃ

✔️তাদের সাথে কোওয়ালিটি টাইম স্পেন্ড করুন

✔️তাদের কথাগুলো মনোযোগ দিয়ে শুনুন।

✔️তাদের ইচ্ছে গুলো জানুন এবং সম্ভব পূরণ করার চেষ্টা করুন। স্পম্ভব না হলেও তাকে জানান ও তার আবেগের গুরুত্ব দিন। 

✔️প্রতিনিয়ত তাদের মন কেমন আছে -জানতে চান।

✔️তাদের শারীরিক সুস্থতার পাশাপাশি মানসিক সুস্থতার দিকেও খেয়াল করুন।

✔️জীবনে ফেলে আসা অসফলতা গুলোকে নিয়ে চিন্তা  না বর্তমানের পরিবর্তিত জীবন নিয়ে কি করতে পারেন, সেটা পরিকম্পনা করতে সহয়তা করুন।

✔️তাদেরকে বিভিন্ন কাজে ব্যস্ত রাখার চেষ্টা করুন যেমন দৈনন্দিন শারীরিক চর্চা করার জন্য উৎসাহী করতে পারেন।

✔️তাদের পছন্দ এমন জায়গা গুলোয় তাদের নিয়ে ঘুরতে যেতে পারেন।

কেন আমাদের পরিবারের বয়োজ্যৈষ্ঠ সদস্যরা ডিপ্রেশনে ভুগে?

এরকম ধারণা থেকেই তাদের মাঝে ডিপ্রেশনের জন্ম হয়। তারা আস্তে আস্তে নিজেদেরকে নিজের মধ্যে গুটিয়ে নেই। যেটা আমরা প্রায় দেখতে পারি আমাদের পরিবারের বয়োজ্যেষ্ঠদের মধ্যে যেমন

✔️ আর আগের মত কথা বলে না বা অনেক ক্ষেত্রেই চুপচাপ হয়ে গিয়েছেন।

✔️তারা কোনো কাজে আগের মত আনন্দ খুঁজে পান না।

✔️তারা  অল্পতেই হাপিয়ে উঠে বা আগ্রহ নিয়ে কোন কাজ করতে পারেন না।

✔️দীর্ঘ সময় মনোযোগ ধরে রাখতে পারেন না।

✔️তাদের মন ভালো থাকে না অথবা অল্প কোনো কারণেই মন খারাপ হয়ে যায়।

আপনার পরিবারের বয়োজ্যেষ্ঠদের মধ্যে এমন লক্ষণগুলো আপনি খেয়াল করলেই দেখতে পাবেন। এক্ষেত্রে পরিবারের একজন সদস্য হিসেবে আপনার করণীয়গুলো হলোঃ

✔️ যতটুকু সম্ভব আপনার সময়ের বেশিরভাগ অংশ তাদের দেওয়ার চেষ্টা করুন।
✔️ তাদের কথাগুলো মনোযোগ দিয়ে শুনুন।
✔️ তাদের ইচ্ছে গুলো জানুন এবং সেগুলো পূরণ করার চেষ্টা করুন।
✔️ প্রতিনিয়ত তাদের মন কেমন আছে তার খোঁজ রাখুন।
✔️ তারা যেন একাকীত্ব বোধ না করে সেদিকে সম্পূর্ণ নজর রাখুন।
✔️ তাদের শারীরিক সুস্থতার পাশাপাশি মানসিক সুস্থতার দিকেও খেয়াল করুন।
✔️ জীবনে ফেলে আসা অসফলতা গুলোকে নিয়ে চিন্তা  না করে যেন সফলতাগুলোকে নিয়ে গর্ব বোধ  করেন,  তা নিশ্চিত করার চেষ্টা করুন।
✔️ তাদেরকে বিভিন্ন কাজে ব্যস্ত রাখার চেষ্টা করুন যেমন দৈনন্দিন শারীরিক চর্চা করার জন্য উৎসাহী করতে পারেন।
✔️ তাদের পছন্দ এমন জায়গা গুলোয় তাদের নিয়ে ঘুরতে যেতে পারেন।

খান মাহ্জাবিন মিথ
ইন্টার্ন ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্ট।

Leave your thought here

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Select the fields to be shown. Others will be hidden. Drag and drop to rearrange the order.
  • Image
  • SKU
  • Rating
  • Price
  • Stock
  • Availability
  • Add to cart
  • Description
  • Content
  • Weight
  • Dimensions
  • Additional information
Click outside to hide the comparison bar
Compare