পরীক্ষা, ফলাফল ও করণীয়

Psychology

পরীক্ষা, ফলাফল ও করণীয়

গত সপ্তাহে পরীক্ষার ফলাফলকে কেন্দ্র করে অনেকের মধ্যেই অনেক রকম প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে। একজন ছাত্র-ছাত্রীর প্রতিক্রিয়া, তার মা-বাবা কিংবা তার আত্মীয় স্বজন – কোন পক্ষের উপরেই একইরকম প্রভাব ফেলে না। তাই কার ভূমিকা কেমন হবে বা কি করণীয় হবে, সেটাও পরিস্থিতি অনুযায়ী ভিন্নই হবে। এই বর্তমান পরিস্থিতিতে আমরা যা করতে পারিঃ 

১। শিক্ষার্থী হিসেবে করণীয়ঃ প্রথমেই নিজের ফলাফলকে পর্যালোচনা করি। ফলাফল যেটাই হোক না কেন, সেক্ষেত্রে পরবর্তী পরিকল্পনার নিয়ে ভাবি এবং সেই অনুযায়ী কাজ করি। কারো ফলাফল সন্তোষজনক না হলেও মনে রাখা প্রয়োজন যেঃ-

  •  আমরা সাময়িক সময়ের জন্য আশেপাশের মানুষের কাছে মূল্যায়িত হলেও, এর থেকেও গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে আমরা প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি কিনা
  • আমরা অতীতের অপরাধবোধ ও ভবিষ্যতের অনিশ্চয়তায় মনোযোগ না দিয়ে বর্তমান করণীয়তে মনোযোগ দিতে চেষ্টা করছি কিনা!

২। বাবা- মা হিসেবে করণীয়ঃ সাংস্কৃতিক ভাবেই আমাদের মা-বাবারা তাদের সন্তানের জন্য অমানুষিক পরিশ্রম করে থাকেন। সন্তানের অর্জন তাদের জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রাপ্তিরই অংশ। আপনার সন্তান সন্তোষজন ফলাফল করলে যা করতে পারেনঃ

  • তাকে জানান যে তার অর্জনে আপনি কতটা ভালো অনুভব করছে
  • একই সাথে আপনার সন্তান যে কষ্ট করেছে সেটাকেও স্বীকৃতি দিন
  • সন্তানের সাথে পরবর্তী পরিকল্পনা করুন এবং তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষার জন্য মানসিকভাবে ধৈর্য ধরতে সাহায্য করুন।

অন্যদিকে সন্তোষজনক ফলাফল না হলে মা-বাবা বা অভিভাবক হিসেবে নিজেকে ব্যর্থ মা-বাবা হিসেবে মূল্যায়ন করবেন না। আপনার খারাপ অনুভূতি তৈরি হতে পারে কিন্তু তা নিয়ন্ত্রিত ভাবে প্রকাশ করুন। এই রকম অপ্রত্যাশিত পরিস্থিতিতে যা করা যেতে পারেঃ

  • সন্তানের সাথে গঠনমূলক আলোচনা করার চেষ্টা করুন এবং দুই পক্ষই (অভিভাবক ও সন্তান) বোঝার চেষ্টা করুন যে গতবারের প্রচেষ্টায় কোন ভুল পরিকল্পনা ছিল কিনা
  • বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য কি কি করা যেতে পারে
  • নতুন কোন ধরনের ভালো অভ্যাস তৈরি করা যেতে পারে কিনা, যাতে পরবর্তী পরীক্ষায় আরো ভালো ভাবে চেষ্টা করা যেতে পারে ।

আর সন্তান যদি কোন কারণে পরীক্ষায় অকৃতকার্য হয়, সেক্ষেত্রেও অবশ্যই পরিবর্তী পরিকল্পনা ও প্রচেষ্টা নিশ্চিত করার চেষ্টা করবেন। সন্তানকে পরবর্তীতে চেষ্টার জন্য উৎসাহিত করুন। নিজের ও সন্তানের খারাপ অনুভূতি গঠনমূলক ভাবে প্রকাশ করার চেষ্টা করুন। 

৩। আত্মীয়-স্বজন বা প্রতিবেশী হিসেবে করণীয়ঃ  আমাদের সামাজিক পরিবেশ ও মন্তব্য যেকোনো মানুষের বেড়ে ওঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। একজন শুভাকাঙ্ক্ষী হিসেবে যা করনীয়ঃ

  • অতিরিক্ত ভালো পরামর্শ এড়িয়ে চলা। কেননা একই কথা বারবার বলাও মানসিক চাপ তৈরি করে
  • ভালো কিংবা খারাপ যেই ফলাফলই হোক না কেন, পরবর্তী পদক্ষেপের জন্য উৎসাহিত করা।
  • কারো সাথে তুলনা করা এড়িয়ে চলা

এইচএসসি পরীক্ষা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সময়ে যেকোনো শিক্ষার্থী প্রচণ্ড অনিশ্চয়তার অনুভূতির মধ্যে থাকে। একজন শিক্ষার্থীর প্রচেষ্টা ও অভিভাবকদের গঠনমূলক আচরণই পারে বর্তমান পরিস্থিতিকে ভালোভাবে খাপ খাওয়াতে।

Leave your thought here

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Categories

You cannot copy content of this page

Select the fields to be shown. Others will be hidden. Drag and drop to rearrange the order.
  • Image
  • SKU
  • Rating
  • Price
  • Stock
  • Availability
  • Add to cart
  • Description
  • Content
  • Weight
  • Dimensions
  • Additional information
Click outside to hide the comparison bar
Compare