বডি ডিসমরফিক ডিসঅর্ডার

Psychology

বডি ডিসমরফিক ডিসঅর্ডার

বডি ডিসমরফিক ডিসঅর্ডার, খুব অপরিচিত লাগলেও আমাদের চারপাশে এ ডিসঅর্ডার এর অন্তর্ভুক্ত অসংখ্য মানুষ লক্ষ্য করা যায়,হয়তো তারা জানেও না যে তারা এ রোগে আক্রান্ত রয়েছেন।সাধারনত আমাদের শারীরের বিভিন্ন অঙ্গ,বা অংশের এক প্রকার কাল্পনিক ত্রুটির আবির্ভাব ই ডিসমরফিক বডি ডিসঅর্ডার। যেমন ধরা যাক আমাদের হাত,পা,চোখ,কান,শরীর,চুল,ঠোট,চোয়াল ইত্যালি অঙ্গ গুলোর এক বা একাধিক অঙ্গ বা অংশকে আমাদের কাছে ত্রুটিপুন্য মনে হতে লাগলো।মনে হতে লাগলো যে আমি দেখতে অসুন্দর, দেখতে খারাপ,বা আমার আশেপাশের মানুষ গুলোর সাথে আমার এই লুক যাচ্ছে না।অথার্ৎ মনের মাঝে একটা ইতস্ততবোধ তৈরী করে ফেলা।এবং এর ফলে ধীরে ধীরে সমাজের থেকে নিজেকে আড়াল করে রাখা,মানুষের সংস্পর্শে কম আসা,এবং নিজেকে নিয়ে হীনমন্যতায় ভুগতে থাকে।

বডি ডিসমোরফিক ডিসঅর্ডারের লক্ষণ:

1. শারীরিক অঙ্গ বা চেহারার ত্রুটি নিয়ে অনেক বেশি চিন্তা করে বা ব্যস্ত থাকে। যদিও শরীরে বা চেহারায় কোন ত্রুটি না থাকলেও বা থাকলে অন্ত্যান্ত নগণ্য।

২. দৃঢ় বিশ্বাস যে তার চেহারাতে কোনও ত্রুটি রয়েছে যা তাকে কুৎসিত বা বিকৃত করে তোলে। নিজেকে কুৎসিত মনে করে

৩. বিশ্বাস করে অন্যরা নেতিবাচক ভাবে তার চেহারা সম্পর্কে খেয়াল করে বা উপহাস করে।

৪. নিজেকে প্রতিরোধ করা বা নিয়ন্ত্রণ করার জন্য বার বার/ঘন ঘন ত্রুটিগুলি সংশোধন বা আড়াল করার লক্ষ্যে বিভিন্ন আচরণ বার বার করে থাকে যেমন- ঘন ঘন আয়না পরীক্ষা করা, নিজেকে বারবার সাজানো, প্লাস্টিক সার্জারি করা, ত্বক তোলা ইত্যাদি।

৫। ত্রুটিগুলি আড়াল করার চেষ্টা করা যেমন – স্টাইলিং, ভারী মেকআপ করা, ঢিলেঢালা পোশাক পড়া, রুমাল বা কাপড় দিয়ে ঢেকে রাখা, চশমা পড়া, হাত দিয়ে ঢেকে রাখা ইত্যাদি।

৬। নিজের চেহারাকে অন্যের সাথে ক্রমাগত তুলনা করে।

 করা।

৭। অন্যের কাছ থেকে নিজের চেহারা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা

 প্রায়শই আশ্বাস খুঁজে বা বারবার জিজ্ঞাসা করে।

৮। পারফেকশনিস্ট প্রবণতা থাকা।

৯। অল্প সন্তুষ্টির জন্য প্রসাধনী পদ্ধতিগুলি সন্ধান করে।

১০। সামাজিক পরিস্থিতি এড়িয়ে চলে।

৪. নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য বার বার ত্রুটিগুলি সংশোধন বা আড়াল করার লক্ষ্যে বিভিন্ন আচরণ বার বার করে থাকে যেমন- ঘন ঘন আয়না পরীক্ষা করা, নিজেকে বারবার সাজানো, প্লাস্টিক সার্জারি করা, ত্বক তোলা ইত্যাদি। শারীরিক ত্রুটি নিয়ে বিভিন্ন আচরণ বার বার সংশোধন করতে চান যেমনঃ ঘন ঘন আয়না পরীক্ষা করা, নিজেকে বারবার সাজানো, প্লাস্টিক সার্জারি করা, ত্বক তোলা ইত্যাদি।

কারণসমূহ :

নির্দিষ্ট করে বলা যায় না যে কী কারণে বডি ডিসমোরফিক ডিসঅর্ডার হয়। বডি ডিসমারফিক ডিসঅর্ডার সাধারণত কৈশরে শুরু হয় এবং এটি পুরুষ এবং স্ত্রী উভয়কেই প্রভাবিত করে।

কিছু কারণগুলি শরীরের ডিসমোরিক ডিসঅর্ডার বিকাশ হওয়ার ঝুঁকি বাড়িয়ে তোলে বলে মনে করা হয়।

১।পারিবারিক ইতিহাসঃ রক্তের আত্মীয় বা পরিবারের মধ্যে বডি ডিসমোরফিক ডিসঅর্ডার বা শুচিবায়ু জনিত মানসিক সমস্যার কেউ থাকলে।

২।মস্তিষ্কে অস্বাভাবিকতাঃ মস্তিষ্কের হরমোন কোন কারণে বেড়ে বা কমে গেলে বা নিওরোট্রান্সমিটার জনিত সমস্যা হলে।

৩। শরীর সম্পর্কে নেতিবাচক অভিজ্ঞতাঃ নেতিবাচক জীবনের অভিজ্ঞতা যেমন শৈশব টিজিং, অবহেলা বা গালাগালি।

৪. বুলিং বা টিজিংয়ের অভিজ্ঞতা: কোন ব্যক্তি যদি তার শরীর বা শারীরিক বেশিষ্ট্য নিয়ে স্কুল, কলেজে বুলিংয়ের শিকার হয় তাহলে তার মধ্যে এই সমস্যা দেখা দিতে পারে।

৫। মনোবৈজ্ঞানিক কারণঃ  পারফেকশনিজমের মতো কিছু ব্যক্তিত্বের বৈশিষ্ট্য, উদ্বেগ বা হতাশার

কারণে হতে পারে।

৬। সামাজিক কারণঃ সামাজিক চাপ বা সৌন্দর্যের প্রত্যাশা।

Body Dismorphic Disorder (বডি ডিসমরফিক ডিসঅর্ডার)  চিকিৎসা :

ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্ট বা প্রেফেশলনাল সাইকোলজিস্টের কাছে থেকে নিতে হবে। বডি ডিসমোরফিক ডিসঅর্ডারের জন্য cognitive behavioral therapy আপনাকে সহায়তা করতে পারেঃ

আপনার দেহের সম্পর্কে নেতিবাচক চিন্তাকে চ্যালেঞ্জ করা

 চিন্তাভাবনার আরও ইতিবাচক উপায়গুলি শিখতে।

বারবার আয়না দেখা কমানোর বিকল্প উপায় বের করা

নিজেকে লুকিয়ে রাখার আচরণগুলো নিয়ন্ত্রণ করা

সেলফ-কনফিডেন্স বাড়ানো  যেমন সামাজিক পরিস্থিতি মোকাবেলা করা বা সামাজিক দক্ষতার প্রশিক্ষণ।

(খ)Medications: Psychiatrist বা মনোরোগ বিশেষজ্ঞ কাছ থেকে মেডিসিন নিতে হবে।

Mahadia Islam

Leave your thought here

Your email address will not be published. Required fields are marked *