মানসিক স্বাস্থ্য-২
মানসিক স্বাস্থ্য-২
আমরা গত লিখায় জেনেছিলাম, মানসিক স্বাস্থ্য কি? আজকে আলোচনা বিষয়বস্তু হচ্ছে, কখন বুঝব যে কারো মানসিক স্বাস্থ্য সংক্রান্ত সমস্যা কিংবা মানসিক সমস্যা আছে। নিচে কিছু বিষয় আলোচনা করা হল, নিজের সাথে মিলিয়ে দেখতে পারেনঃ
১। এমন কোন ভাবনা, আচরণ, অনুভূতি কিংবা শারীরিক প্রতিক্রিয়া কি কাজ করে যেগুলো তীব্র মাত্রায় অস্বস্তি তৈরি করে । যেমনঃ রাগ সবারই হয়। কিন্তু রাগের কারণে হয়ত প্রাত্যহিক জীবনে সমস্যা তৈরি হচ্ছে, যেমনঃ সম্পর্ক খারাপ হয়ে যাচ্ছে। রাগ হবার পর অস্থিরতার কারণে আর কোন কিছুতে মনোযোগ দিতে না পারা।
২। ভাবনা, আচরণ, অনুভূতি কিংবা শারীরিক প্রতিক্রিয়ার কারণে পরিবেশের সাথে খাপ খাওয়াতে সমস্যা হয় কিনা। ধরুনঃ সবাই মানে যে সব সময় পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকা উচিত। কিন্তু দেখা গেল এই পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার মাত্রা এতটাই বেশি যে, ব্যক্তি এই কাজ করতে করতে ক্লান্ত হয়ে পড়ছে এবং জীবনের অন্যান্য বিষয় নিয়ে ভাবারই সময় পাচ্ছে না। এতে জীবনে চাপ আরও বেড়ে যায় এবং সবার সাথে খাপ খাওয়াতেও সমস্যা হয়।
৩। এমন কোন আচরণ কি করে ফেলছেন যা সমাজিক নীতি বিরুদ্ধ। যেমনঃ চুরি করা , স্কুল পালানো।
৪। একটি সমাজে সব মানুষের কিছু সাধারণ আচরণ, চিন্তার ধরণ আছে। এমন কোন আচরণ, ভাবনা কি আছে যা অন্যের থেকে বেশি ভিন্ন। যেমনঃ ধর্ম নিয়ে এমন কিছু ভাবনা প্রতিনিয়ত আসে। উদাহরণ হিসেবে বলা যেতে পারেঃ আমি নাপাক, আমি পবিত্র জায়গা বা ধর্ম গ্রন্থ কে অবমাননা করছি ইত্যাদি। এছাড়াও গায়েবী কথা শুনতে পাওয়া, বা যেকেউ যেকোন সময় মেরে ফেলবে।
৫। এমন কোন আচরণ কি করা হয় কিনা যার ফলে অন্যের ক্ষতি হতে পারে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে বাইপোলার মুড ডিসর্ডার কিংবা সিজোফ্রেনিয়ার ( পরবর্তীতে এসব ডিসঅর্ডার সম্পর্কে আমরা বিস্তারিত জানতে পারবো) ক্লায়েন্ট আক্রমনাত্তক আচরণ করে ফেলেন। তবে অবশ্যই তা ক্ষেত্র বিশেষে প্রজোয্য। ঔষুধ ঠিক মত না নিলে এর সম্ভাবনা বেড়ে যায়। খুব সহযে যদি বুঝতে চাই, আপনি কি এমন এমন কোন আচরণ করছেন যা সাধারণ মাত্রা থেকে বেশি কিংবা কম। যেমনঃ মন খারাপ আমাদের সবারই হয়। কিন্তু মন খারাপের মাত্রা কি এতই বেশি যে দিনের পর দিন কোন কাজ করতে পারছেন না, কোন আনন্দই পাচ্ছেন না। আরেকভাবে বলা যায়ঃ দুশ্চিন্তার ফলে সবারই শারীরিক এবং মানসিক লক্ষণ দেখা যায় । কিন্তু সেগুলোর মাত্রা কি এতইটাই তীব্র যে এর ফলে দিনের পর দিন ঘুমাতে পারছেন না, ছোট থেকে ছোট বিষয়ে আপনার শারীরিক প্রতিক্রিয়ার মাত্রা তীব্র হয়ে যায়। মাত্রা খুব বেশি হলে অনেক ক্ষেত্রে একা একা সমস্যা কাটিয়ে ওঠা কঠিন হয়ে পড়ে, এক্ষেত্রে মনোবৈজ্ঞানিক চিকিৎসার প্রয়োজন হয়।
Published in Telepsychiatry Research and Innovation Network.