আবেগ

Psychology

আবেগ

অনেক সময় আমরা নিজেদেরকে অনেক আবেগপ্রবণ বলে থাকি। আবার আমরা এও বলে থাকি যে বোকারাই আবেগপ্রবণ হয়। তাহলে আবেগ আসলে কি ? বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায় আমরা আমাদের আবেগ অনুভূতি গুলো ঠিক মত বুঝতে পারিনা। আর তখনই আমাদের মধ্যে প্রশ্ন জাগে যে আমরা যা অনুভব করি তা কি ভুল? তবে দেখা যায় যে আমাদের আবেগগুলো আমাদের নিজেদেরকে বুঝতে সহায়তা করে।

আবেগ (Emotion) হল আমাদের এমন একটি অবস্থা যার পরিবর্তনে আমাদের মধ্যে শারীরিক এবং মানসিক পরিবর্তন আসে এবং এর প্রভাব আচরনের মাধ্যমে প্রকাশ পায়। ১৯৭২ সালে মনোবিজ্ঞানী Paul Eckman প্রথম ৬টি মৌলিক আবেগের নামকরণ করেন। সেগুলো হচ্ছে ভয়, রাগ, বিতৃষ্ণা, হতবাক হওয়া, খুশি এবং কষ্ট। পরবর্তীতে ১৯৯৯ তিনি আরও কিছু মৌলিক আবেগের নাম করণ করেন, যেমনঃ লজ্জা, উৎসাহী, অবজ্ঞা, বিভ্রান্ত, গর্ব, সন্তুষ্টি এবং পরিতৃপ্তি।

 আবেগ নিয়ে আমাদের মধ্যে বিভিন্ন ধরণের ভ্রান্ত ধারণা আছে। আজকে এই ভ্রান্ত ধারণগুলো নিয়েই আলোচন করবঃ

🟥 ভ্রান্ত ধারনা ১ঃ বোকারাই আবেগপ্রবণ হয়।

 ✅ সঠিক ব্যখ্যাঃ প্রতিটি মানুষের মধ্যেই আবেগ এবং যৌক্তিকতা- দুটো অংশই বিদ্যমান। কোনটি প্রভাব বেশি হবে তা নির্ভর করে ব্যক্তি তার অভিজ্ঞতা , জ্ঞান এবং পরিবেশ থেকে কি শিখছে। কোন ব্যক্তি যদি বেশি আবেগ প্রবণ হয়, এর অর্থ এই নয় যে তিনি বোকা। তিনি যুক্তির পরিবর্তে আবেগ নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে বেশি স্বস্তি বোধ করেন বলেই আবগ প্রকাশ বেশি করেন।

🟥 ভ্রান্ত ধারনা ২ঃ আবেগ অযৌক্তিক।

✅ সঠিক ব্যখ্যাঃ প্রকৃত তথ্য হচ্ছে, প্রতিটি আবেগ মানসিক অবস্থার সম্পর্কে কোন না কোন তথ্য দেয়। যেমনঃ কেউ যখন কোন বিপদের সম্মুখীন হয় তার মধ্যে ভয় তৈরি হয়, অন্যদিক যখন কারো মনে হয় যে তার সাথে কোন অন্যায় হচ্ছে বা পরিস্থিতি তার নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে যে তখন রাগ হয়। অনেক সময় দেখা যায়, যুক্তির মাধ্যমে সমস্যার ধরণ বোঝা যায় না। সেখানে আবেগের ধরণ লক্ষ্য করলে খুব সহযেই মানসিক অবস্থা নির্ণয় করা বোঝা সম্ভব । সুতরাং, আবেগ কখনোই অযৌক্তিক নয়।

🟥 ভ্রান্ত ধারনা ৩ঃ আবেগ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়।

✅ সঠিক ব্যখ্যাঃ আবেগ একটি স্বতঃস্ফূর্ত প্রক্রিয়া। আবেগের নিয়ন্ত্রণ হয় না, আবেগ ব্যবস্থাপনা সম্ভব। নেতিবাচক পরিস্থিতিতে নেতিবাচক অনুভূতিই তৈরি হবে। আপনি চাইলেই তা বন্ধ হয়ে যাবে না। সেক্ষেত্রে একজন ব্যক্তির শেখা প্রয়োজন যে,এই নেতিবাচক অনুভূতি যাতে ব্যক্তি কোন অপ্রীতিকর পরিস্থিতির দিকে না নিয়ে যায়।

 🟥 ভ্রান্ত ধারনা ৪ঃ আবগের ব্যবস্থাপনা শুনলে মনে হয় আমি যান্ত্রিক হয়ে গিয়েছি।

 ✅ সঠিক ব্যখ্যাঃ প্রকৃতপক্ষে, আবেগে ব্যবস্থাপনা প্রাত্যহিক জীবনের একটি মানসিক দক্ষতার অংশ। ঠিকভাবে নিজের আবেগ পরিচালনা করতে না পারলে দৈনিন্দিন জীবনে ব্যক্তিগত এবং পেশাগত জীবনে বিরূপ প্রভাব পড়ে। নেতিবাচক আবেগ সঠিক ভাবে প্রকাশ করাও মানসিক দক্ষতার একটি অংশ।

 সবশেষে, আবেগ একজন মানুষের জীবনে অবিচ্ছেদ্য অংশ। যতটা সঠিকভাবে এর পরিচালনা সম্ভব , আমাদের ব্যক্তিজীবনে এবং পেশাগত জীবনে ততটাই নিয়ন্ত্রিত জীবন পরিচালনা সম্ভব। বিভিন্ন মানসিক চাপের কারনে আমাদের মধ্যে আবেগের ভারসাম্য নষ্ট হয়। অনেক ক্ষেত্রে আমাদের আবেগ কে না বুঝতে পারা বা আবেগ নিয়ন্ত্রণে অসুবিধা অনেক বড় বড় বিপদজনক পরিস্থিতিতে ফেলে দেয়। আবার দেখা যায় বিভিন্ন মানসিক রোগের কারনে আবেগ প্রকাশে আমাদের মধ্যে সমস্যার সৃষ্টি হয়ে থাকে। ♦

যদি আপনি আবেগ নিয়ে কাজ করতে যেয়ে সমস্যা অনুভব করেন বা নিজের পরিচালনা করতে না পারেন সেক্ষেত্রে প্রফেশনাল মনোবিজ্ঞানী ও মনোরোগ বিশেষজ্ঞের সহায়তা পেতে যোগাযোগ করুন টেলিসাইকিয়াট্রি রিসার্চ এন্ড ইনোভেশন নেটওয়ার্ক এ । 👉আপনার যেকোন ধরনের মানসিক সমস্যার সাইকোথেরাপি ও কাউন্সেলিং এর জন্য যোগাযোগ করুন টেলিসাইকিয়াট্রি রিসার্চ এ্যান্ড ইনোভেশন নেটওয়ার্ক এ ।

Leave your thought here

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Categories

You cannot copy content of this page

Select the fields to be shown. Others will be hidden. Drag and drop to rearrange the order.
  • Image
  • SKU
  • Rating
  • Price
  • Stock
  • Availability
  • Add to cart
  • Description
  • Content
  • Weight
  • Dimensions
  • Additional information
Click outside to hide the comparison bar
Compare